করোনায় মৃত্যু ২৫ হাজার ছাড়াল, আক্রান্ত সাড়ে ৫ লাখ

মহামারি এক ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বব্যাপী। প্রতিদিন তাতে হাজারো মানুষ মারা যাচ্ছে কিংবা আক্রান্ত হচ্ছে। বৈশ্বিক এই মহামারি সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে প্রথম, দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয়; সব সারির দেশ। সর্বশেষ হিসাব বলছে, করোনায় প্রাণহানির সংখ্যা ২৫ হাজার ছাড়িয়েছে আর আক্রান্ত সাড়ে ৫ লাখের বেশি।

চীনে প্রাদুর্ভাব শুরু হলেও ভাইরাসটিতে সবচেয়ে বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। সংখ্যাটা ৮৫ হাজার ৯০৬। সেখানে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৩০৭ জনের। এদিকে সর্বোচ্চ ৮ হাজার ২১৫ মৃত্যু নিয়ে সবার উপরের স্থানটি ইতালির। সেখানেও আক্রান্তের সংখ্যা ৮০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে।

করোনায় যখন গোটা বিশ্ব বিপর্যস্ত তখন কম আর বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকা দিয়ে লাভ কি। তবুও ইতালির মতো অবস্থা দাঁড়িয়েছে স্পেনের। দেশটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭৬৯ জন মৃত্যুর মিছিলে যুক্ত হয়েছেন। দেশটিতে করোনায় মোট প্রাণহানির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৮৫৮ জনে।

করোনায় প্রাণহানিতে চীনকে ছাড়িয়ে গেছে ইতালি এবং স্পেন। বৃহস্পতিবার স্পেনে লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছে। লকডাউন চলছে ইতালিতেও। তবুও লাশের লাইন ছোট হচ্ছে না। ফ্রান্সেও চলছে লকডাউন। গত একদিনে সেখানে ৩৬৫ জনের মৃত্যুর পর সংখ্যাটা এখন ১ হাজার ৬৯৬।

Italy

ইউরোপের আরেক কেন্দ্র যুক্তরাজ্যও লকডাউন। সেখানেও গত ২৪ ঘণ্টায় ১৮১ নিয়ে মোট মৃত্যু হয়েছেন ৭৫৯ জনের। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রে গতকাল আক্রান্তের সংখ্যায় সবাইকে ছাপিয়ে পাশপাশি নতুন করে ২৬৮ জনের মৃত্যু রেকর্ড করা হয়। দেশটিতে সবচেয়ে বাজে অবস্থা জনবহুল নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের।

এদিকে এশিয়ার ইরানের অবস্থা আরও নাজুক হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় ১৪৪ জনের প্রাণহানি হয়েছে; আক্রান্তও প্রায় তিন হাজার। দেশটিতে করোনায় মৃত্যুর তালিকায় নাম উঠেছে ২ হাজার ৩৭৮ জনের। তবে মহামারির মধ্যেও নতুন করে তেহরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ওয়াশিংটন।

ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব যে উহানে শুরু হয়েছিল সেখানে বিধি-নিষেধ প্রত্যাহার হচ্ছে ধীরে ধীরে। চীনে নতুন করে স্থানীয়ভাবে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা টানা কয়েকদিন ছিল না। যারা আক্রান্ত হচ্ছিলেন, তারা সবাই বিদেশ ফেরত। তবে ফের আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় দ্বিতীয় দফা বিষ্ফোরণের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

ব্যাপকভাবে বিস্তার ছড়ানো দেশগুলোর তালিকায় রয়েছে জার্মানির নামও। দেশটিতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ হাজার ছুঁই ছুঁই। তবে আক্রান্ত অর্ধলক্ষ হলেও দেশটিতে মৃত্যু হয়েছে ৩০৪ জনের—যা ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম। মহাদেশটিতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে করোনায়।

এছাড়া ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোতেও শত শত মানুষের মৃত্যু হয়েছে। যেমন নেদারল্যান্ডসে ৫৪৬, বেলজিয়ামে ২৮৯, সুইজারল্যান্ডে ২০৭, সুইডেনে ৯২, পর্তুগালে ৭৬, অস্ট্রিয়ায় ৫৮, ডেনমার্কে ৫২ এবং আয়ারল্যান্ডে ১৯, রোমানিয়ায় ২৪ এবং গ্রিসে ২৭ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে করোনা।

অস্ট্রেলিয়ায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। কানাডায় মৃত্যু হয়েছে ৩৯ জনের এবং ব্রাজিলে সেই সংখ্যাটা ৭৭। দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রকোপ শুরু হলেও দেশটি তা নিয়ন্ত্রণ করেছে ভালোভাবেই। তবে সেখানেও ১৩৯ জন করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া ইন্দোনেশিয়ায় ৮৭ এবং জাপানে ৪৭ জন করোনায় মারা গেছেন।

প্রতিবেশী ভারতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৮০০ ছাড়ানোর পাশপাশি, মৃত্যুর সংখ্যা গিয়ে ঠেকেছে ২০ জনে। দেশটি এখন ২১ দিনের লকডাউনে আছে। এছাড়া পাকিস্তানে আক্রান্তের প্রায় ১৩শ। আক্রান্তদের মধ্যে ৯ জন মারা গেছেন। ফিলিপাইনে করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫৪ জন; আক্রান্ত ৮ শতাধিক।

এদিকে বাংলাদেশে সবশেষ ৪ জনকে নিয়ে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ব্যক্তির মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৮ জনে; এরমধ্যে ৫ জন মারা গেছেন। এছাড়া ১১ জন সুস্থ বলে জানিয়েছে সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা কেন্দ্র। দেশজুড়ে অঘোষিত এক লকডাউন চলছে। আপাতত এর মেয়াদ ৪ এপ্রিল পর্যন্ত।

 

Source: https://www.jagonews24.com

Jobs Offers

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button