টানা ৩৫ দিন করোনা রোগীর সেবার পর চিকিৎসকের মৃত্যু
হাসপাতালে টানা ৩৫ দিন বিশ্রামহীন করোনা আক্রান্ত রোগীদের সেবা করার মতো বিশাল এক লড়াইয়ের পর চীনের এক চিকিৎসক স্ট্রোক করে মারা গেছেন। তার নাম ডা. ডং তিয়ান। বয়স হয়েছিল মাত্র ২৯ বছর। তিনি ছিলেন একজন অ্যানেসথেসিয়া (অবেদনবিদ) বিশারদ।
গত শনিবার করোনাভাইরাসের উৎপত্তিস্থল চীনের মধ্যাঞ্চলের হুবেই প্রদেশর রাজধানী শহর উহানের একটি হাসপাতালের ওই চিকিৎসক মারা যান। আর মাত্র এক সপ্তাহ পর ছিল তার ৩০তম জন্মবার্ষিকী। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর তিনি সামনে থেকে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছিলেন।
তিনি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন। অবশেষে গত ২১ মার্চ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার স্ত্রী আছে। তবে কোনো সন্তান এখনো হয়নি। বিয়ে করেছেন কিছুদিন আগে। এছাড়া তার অসুস্থ বাবাও এখনো জীবিত রয়েছেন। তার মৃত্যুতে শোকের মাতম শুরু হয়েছে পরিবারে।
একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, হুবেই প্রদেশের দাংগিয়াংয় শহরে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হচ্ছে। ওই শহরেই তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার শেষকৃত্যস্থলে মানুষ হাতে ব্যানার নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। যাতে লেখা রয়েছে, ‘অ্যান্টি-করোনাভাইরাস হিরো ডং তিয়ান, তোমাকে তোমার নিজের শহরে স্বাগতম।’
ডা. ডং তার অসুস্থ বাবার দেখাশোনা করতেন। জানুয়ারির শেষদিকে স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসক হিসেবে তিনে করোনার উৎপত্তিস্থল উহানে যান মানুষের সেবা করার লক্ষ্য নিয়ে। ওই সময় পুরো হুবেই প্রদেশে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ব্যাপকভাবে বিস্তার লাভ করছিল। মানুষের সেবা করতেই তিনি ছুটে যান বাড়ি ছেড়ে।
টানা ৩৫ দিন রোগীদের সেবার পর গত ২৯ ফেব্রুয়ারি কোয়ারেন্টাইনের প্রয়োজনীয়তার কারণে তাকে কিছুটা বিশ্রাম দেওয়া হয়। কিন্তু হঠাৎ প্রচন্ড মাথা ব্যথা শুরু হলে এবং কথা বলতে পারছেন না দেখে তিনি হাসপাতালে যান। সেখানেই গত ২১ মার্চ তার মৃত্যু হয়।